বাগেরহাট



বাগেরহাট বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা বিভাগের অন্তর্গত বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত একটি বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকাভুক্ত ঐতিহাসিক শহর। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো বাগেরহাট শহরটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা দেয়। প্রশাসনিকভাবে শহরটি বাগেরহাট জেলা এবং বাগেরহাট সদর উপজেলার অংশ। শহরটি মসজিদের জন্য বিখ্যাত। খান জাহান আলী ছিলেন ১৫ শতকের একজন বিখ্যাত সুফি যিনি এখানে বসতি স্থাপন করেছিলেন এবং শহরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তখন এটি মূলত খলিফাতাবাদ নামে পরিচিত ছিল।

যোগাযোগ ব্যবস্থা

[সম্পাদনা]

খুলনা থেকে নিয়মিত লোকাল বাস চলাচল করে। সময় নেয় প্রায় ৪৫ মিনিট। মোংলা বন্দর থেকেও এখানে আসা যায়। ঢাকার সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ১০টা এবং সন্ধা ৭ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত মেঘনা, বনফূল, ফাল্গুনী, আরা, পর্যটক, বলেশ্বর, হামিম ও দোলা পরিবহণের বেশ কিছু বাস ছাড়ে। এছাড়া গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে সোহাগ, শাকুরা, হানিফ ও ইগল পরিবহণের গাড়ি পাওয়া যায়।

এছাড়া ঢাকা থেকে খুলনাগামী আন্তঃনগর ট্রেন সুন্দরবন এক্সপ্রেসে খুলনা এসে সেখান থেকে বাসে বা সিএনজিতে করে বাগেরহাট আসতে পারবেন।

ঘুরে দেখুন

[সম্পাদনা]

বাসস্ট্যান্ড থেকে সাইকেল-রিক্সা করে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখতে পারেন। আপনার যদি তাড়াহুড়ো না থাকে তবে আপনি বাসস্ট্যান্ড থেকে দর্শনীয় স্থানগুলি অনায়াসে হেঁটে যেতে পারেন।

দেখুন

[সম্পাদনা]
মানচিত্র
'"`UNIQ--maplink-00000000-QINU`"'
বাগেরহাটের মানচিত্র
  • 1 ষাট গম্বুজ মসজিদ (বাগেরহাট জেলার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত)। এট একটি প্রাচীন মসজিদ। এই মসজিদটি বহু বছর ধরে ও বহু অর্থ খরচ করে নির্মাণ করা হয়েছিল। পাথরগুলো আনা হয়েছিল রাজমহল থেকে। ষাট গম্বুজ মসজিদে গম্বুজের সংখ্যা মোট ৮১ টি, সাত লাইনে ১১ টি করে ৭৭ টি এবং চার কোনায় ৪ টি মোট ৮১ টি। কালের বিবর্তনে লোকমুখে ৬০ গম্বুজ বলতে বলতে ষাট গম্বুজ নামকরণ হয়ে যায়, সেই থেকে ষাট গম্বুজ নামে পরিচিত। উইকিপিডিয়ায় ষাট গম্বুজ মসজিদ (Q2834259)
  • 2 নয় গম্বুজ মসজিদ (বাগেরহাট সদর উপজেলার ঠাকুর দিঘী বা খাঞ্জেলী দিঘীর পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত)। এটি বাংলাদেশের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। মসজিদের অভ্যন্তরে দুই সারি পাথরের পিলার দিয়ে মোট নয়টি চারকোনা খণ্ডে বিভক্ত করা হয়েছে।এই নয়টি খণ্ডের উপর মসজিদের নয়টি গম্বুজ অবস্থিত। উইকিপিডিয়ায় নয়গম্বুজ মসজিদ (Q7038296)
  • রণবিজয়পুর মসজিদ (বাগেরহাট জেলা সদর থেকে প্রায় ৩.৫ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং ষাটগুম্বজ মসজিদ থেকে ১.৫০ কি.মি. পূর্বে এর অবস্থান।)। এটি বাংলাদেশের এক গুম্বজ বিশিষ্ট মসজিদের মধ্যে সর্ববৃহৎ মসজিদ। বাংলাদেশের বৃহত্তম গম্বুজ (১১ মিটার) রয়েছে এই মসজিদে। উইকিপিডিয়ায় রণবিজয়পুর মসজিদ (Q31724399)
  • 3 সিঙ্গাইর মসজিদ (সিংগাইর মসজিদ) (ষাট গম্বুজ মসজিদ থেকে মাত্র ২৫ মিটার দক্ষিণ-পূর্বে খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়কের পাশে সুন্দরঘোনা গ্রামে অবস্থিত)। মসজিদটি মুঘল শাসনামলে খান জাহান আলী নির্মাণ করেন। একগম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদের চর্তুদিকের কার্ণিশগুলি বক্রকার। মসজিদটিতে ৪টি খিলান যুক্ত দরজা রয়েছে। উইকিপিডিয়ায় সিঙ্গাইর মসজিদ (Q7522807)
  • বিবি বেগুনি মসজিদ (এই মসজিদটি ষাট গম্বুজ মসজিদ থেকে প্রায় ৮০০ মিটার পশ্চিমে, ঘোড়া দিঘির পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত।)। এটি বাংলাদেশের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। মসজিদের স্থাপত্য শৈলী ও নির্মাণ কৌশল দেখে মসজিদটি পঞ্চদশ শতকে খান জাহান আমলে নির্মিত বলে ধারণা করা হয়। এর চার কোণে চারটি মিনার রয়েছে। উইকিপিডিয়ায় বিবি বেগনী মসজিদ (Q31724401)
  • চুনাখোলা মসজিদ, চুনখোলা গ্রাম, বাগেরহাট জেলা এই মসজিদটি ১৫ শতকে নির্মিত। মসজিদটির স্থাপত্যশৈলী খান জাহান আলী নির্মিত অন্যান্য স্থাপত্যশৈলী থেকে ভিন্ন। মসজিদে একটি অর্ধগম্বুজ আছে। ইটের দেয়ালসমূহ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরে ১৯৮০ সালে ইউনেস্কোর সহায়তায় সংস্কার করা হয় উইকিপিডিয়ায় চুনাখোলা মসজিদ (Q25586848)
  • রেজা খোদা মসজিদ (ছয় গম্বুজ মসজিদ) (খান জাহান আলীর মাজারের উত্তর পশ্চিম দিকে ঠাকুর দিঘির কাছে অবস্থিত।)। এটি বাংলাদেশের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। মসজিদটি ১৫ শতকে নির্মিত। উইকিপিডিয়ায় রেজা খোদা মসজিদ (Q27044949)
  • দশ গম্বুজ মসজিদ, রণবিজয়পুর গ্রাম, বাগেরহাট সদর উপজেলা এটি একটি প্রাচীন মসজিদ ও সংরক্ষিত প্রত্নস্থল। মসজিদটি ১৫শ শতকে খান জাহান আমলের মসজিদ বলে মনে করা হয়। উইকিপিডিয়ায় দশ গম্বুজ মসজিদ (Q31724778)
  • 4 খান জাহান আলীর মাজার (বাগেরহাট শহর থেকে ৩ কি:মি: দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত)। খাঞ্জেলী দীঘির উত্তর পাড়ে এক উঁচু ভূমিতে ইসলাম ধর্ম প্রচারক খান জাহান আলীর মাজার অবস্থিত। এই দীঘিতে এই মিঠা পানির কিছু কুমির রয়েছে। প্রতি বছর চৈত্র মাসের পূর্ণিমার সময় এখানে ওরস অনুষ্ঠিত হয় এবং লক্ষাধিক লোক তাতে সমবেত হয়। উইকিপিডিয়ায় খান জাহান সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স (Q31724354)
  • 1 কোদলা মঠ (অযোধ্যা মঠ), অযোদ্ধা গ্রাম, বারুইপাড়া ইউনিয়ন, সদর উপজেলা (বাগেরহাট থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার উত্তরে এবং যাত্রাপুর বাজার থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার পূর্ব দিকে ভৈরব নদীর পূর্বতীরে অবস্থিত)। অনেকের মতে বারো ভুঁইয়ার অন্যতম রাজা প্রতাপাদিত্যের উদ্যেগে তার গুরু (সভাপন্ডিত) অবিলম্ব সরস্বতীর স্মতিস্তম্ভ হিসাবে মঠটি নির্মান করেন। কোদলার মঠটি বর্গাকার চতুস্কোণ বিশিষ্ট ভিতের উপর নির্মিত। উচ্চতা আনুমানিক ১৮.২৯ মিটার। প্রাচীরগুলি চিকন ইটের তৈরি। কোদলা মঠের বহির্ভাগের এ অলংকরণই প্রধান আকর্ষণ। উইকিপিডিয়ায় কোদলা মঠ (Q20824023)

খাওয়া দাওয়া

[সম্পাদনা]

রাত্রিযাপন

[সম্পাদনা]

বাগেরহাটে থাকার জন্য তেমন ভাল ব্যবস্থা নেই, তবে মাঝারি মানের কিছু আবাসিক হোটেল আছে। খুলনা তুলনামূলক কাছে হওয়ায় সেখানে গিয়েও কোন আবাসিক হোটেলে থাকা যায়।