ফারাসান দ্বীপপুঞ্জ

ফারাসান দ্বীপপুঞ্জ আসির অঞ্চলের অন্তর্গত সৌদি আরবের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জ। এই দ্বীপগুলো জিজান শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে লোহিত সাগরের মাঝে অবস্থিত।
জানুন
[সম্পাদনা]ফারাসান দ্বীপপুঞ্জে ৯০টিরও বেশি দ্বীপ রয়েছে, যেখানে প্রায় ১৮,০০০ মানুষের বসবাস (২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী)। তবে এই দ্বীপগুলোর অনেকগুলোতেই কেউ বসবাস করে না।
- 1 ফারাসান দ্বীপ — (আরবি: جزيرة فرسان; উচ্চারণ: জাজিরাত ফারাসান) এটি ফারাসান দ্বীপপুঞ্জের সবচেয়ে বড় দ্বীপ। দ্বীপের প্রধান শহরের নামও ফারাসান। দ্বীপটির আশেপাশের জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য "ফারাসান দ্বীপ সামুদ্রিক অভয়ারণ্য" প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
- 2 সাজিদ দ্বীপ — (বা সাগদ বা সিকেদ দ্বীপ, جزيرة السقيد) এটি দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ এবং এখানে কয়েকটি গ্রাম রয়েছে।
- 3 কামাহ দ্বীপ — (جزيرة قماح) এটি ফারাসান দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। এখানে কিছু মানুষ বসবাস করে এবং দ্বীপটিতে যেতে হলে নৌকা কিংবা ছোট নৌযান ব্যবহার করতে হয়।
কীভাবে যাবেন
[সম্পাদনা]প্রায় ৪০ মিনিটের একটি ফেরি যাত্রার মাধ্যমে এই দ্বীপপুঞ্জে যাওয়া যায়। ফেরি পরিষেবায় কোনো খরচ বহন করতে হয়না। এই ফেরিতে ৩৫–৪০টি গাড়ি এবং প্রায় ৮০০ জন যাত্রী পরিবহন করা যায়। ২০০৬ সালে নতুন ফেরি চালু হওয়ার পর জিজান ও ফারাসান দ্বীপের যাত্রা সময় তিন ঘণ্টা থেকে কমে এক ঘণ্টায় নেমে আসে। প্রতিদিন দুইবার করে যাওয়া-আসার ফেরি চলাচল করে: ফারাসান থেকে জিজান সকাল ৭:৩০ ও বিকাল ৩:৩০ টায়, জিজান থেকে ফারাসান ৭:৩০ ও বিকাল ৩:৩০ টায় একই সময়ে।
আশেপাশে দেখুন
[সম্পাদনা]ফারাসান দ্বীপপুঞ্জে ‘ফারাসান’ নামে একটি শহর আছে, যেখানে প্রায় ২০,০০০ মানুষ বাস করে (২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী)। আপনি চাইলে স্থানীয়দের সাথে দেখা করে তাদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে জানতে পারেন। এছাড়াও দ্বীপে অসাধারণ সুন্দর কিছু উপকূলও রয়েছে।
দেখুন
[সম্পাদনা]দ্বীপের অন্যতম দর্শনীয় স্থান হলো ‘আল কাসার’ নামের বালুকাপাথরের একটি প্রাচীন গ্রাম, যা রোমান আমলের বলে মনে করা হয়। এখানে এখন আর কেউ বসবাস করে না এবং এটি পর্যটকদের জন্য সম্পূর্ণ পুনর্গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও এখানে ‘বাইত আল রিফাই’ নামক একটি ঐতিহ্যবাহী ঘর রয়েছে, যা প্রায় একশ বছর আগে ধনী মুক্তা ব্যবসায়ী মুনাওয়ার আল রিফাইয়ের ছিল। ঘরটি প্রবাল পাথর দিয়ে তৈরি এবং দেয়ালে জিপসাম দ্বারা খোদাই করা নকশা রয়েছে, যা ফারাসানি স্থাপত্যের দারুণ উদাহরণ। এছাড়াও নজরকাড়া ‘নাজদি মসজিদ’ দেখাও একটি দারুণ অভিজ্ঞতা হতে পারে।
ফারাসান দ্বীপে আরও অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে। যেমন: পর্তুগিজ দুর্গ, সবুজ ভবন, আল-নাজদি মসজিদ, ওয়াদি মাতার, মানযিল আল-রিফাই, আল-কাদমি, লুকমান এবং আল-আরদি দুর্গ।

- বাইত আল-জারামাল (بيت الجرمل) (কামাহ দ্বীপের উপকূলে)। ‘বাইত আল-জারামাল’ শব্দের অর্থ হলো “জার্মানদের ঘর”। এটি একটি কয়লার গুদাম হিসেবে ১৯০১ সালে জার্মান ব্যবসায়ীদের দ্বারা নির্মিত হয়।
করুন
[সম্পাদনা]ফারাসান দ্বীপের প্রাচীর ও সমুদ্রতীরে ডাইভিং ও স্নরকেলিং করা অনেক জনপ্রিয়। তবে ফারাসান দ্বীপে কোনো ডাইভ কেন্দ্র নেই, তাই আপনার নিজস্ব স্নরকেলিংয়ের যন্ত্রপাতি সঙ্গে নিতে হবে। দ্বীপে ‘ফারাসান কোরাল রিসোর্ট’ ও ‘ফারাসান হোটেল’ নামে কিছু হোটেল আছে। তবে অনেকেই সমুদ্রতীরে শিবির করে থাকতে পছন্দ করেন। আপনি যদি শিবির করতে চান, তবে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সঙ্গে আনতে ভুলবেন না।
আহার
[সম্পাদনা]দ্বীপে বেশ কিছু স্থানীয় রেস্তোরাঁ আছে যেখানে সুস্বাদু সামুদ্রিক খাবার পাওয়া যায়। এছাড়াও কম দামে পিজ্জা ও বার্গারের দোকানও রয়েছে।
পানীয়
[সম্পাদনা]সৌদি আরবের ঐতিহ্যবাহী পানীয় হলো আরবি কফি। পাশাপাশি স্থানীয়রা চা (যাকে তারা শাই বলে) পান করে থাকে।
রাত্রিযাপন
[সম্পাদনা]অধিকাংশ পর্যটকরা দ্বীপের উপকূলীয় অঞ্চলে শিবির করে রাত কাটাতে পছন্দ করেন। তবে যারা হোটেলে থাকতে চান তাদের জন্য ‘ফারাসান কোরাল রিসোর্ট’, ‘ফারাসান হোটেল’ এবং শহরের ভেতরে কিছু স্থানীয় হোটেল রয়েছে।
পরবর্তী গন্তব্য
[সম্পাদনা]{{#মূল্যায়ন:গ্রামীণ এলাকা|রূপরেখা}}