বিন্ধ্যবাসিনী মন্দির | |
---|---|
बिन्ध्यबासिनी मन्दिर | |
বিন্ধ্যবাসিনী মন্দির | |
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | হিন্দু |
জেলা | কাস্কী |
ঈশ্বর | বিন্ধ্যবাসিনী, কালী, ভগবতী |
উৎসবসমূহ | ফুলপতি, নবদুর্গা, শিবরাত্রি |
পরিচালনা সংস্থা | বিন্ধ্যবাসিনী ধর্মিক ক্ষেত্র বিকাশ সমিতি (बिन्ध्यबासिनी धार्मिक छेत्र बिकाश समिति) |
অবস্থান | |
অবস্থান | পোখরা |
রাজ্য | গণ্ডকী |
দেশ | নেপাল |
স্থানাঙ্ক | ২৮°১৪′১৬″ উত্তর ৮৩°৫৯′০৩″ পূর্ব / ২৮.২৩৭৮° উত্তর ৮৩.৯৮৪২° পূর্ব |
স্থাপত্য | |
ধরন | শিখরা |
সৃষ্টিকারী | সিদ্ধি নারায়ণ শাহ বা খড়গমান মল্ল |
সম্পূর্ণ হয় | ১৭৬০ |
বিনির্দেশ | |
মন্দির | ১ |
স্মৃতিস্তম্ভ | ১ |
উচ্চতা | ৯১৫ মি (৩,০০২ ফু) |
ওয়েবসাইট | |
http://bindhyabasinitemple.com/ |

বিন্ধ্যবাসিনী মন্দির ( নেপালি : बिन्ध्यबासिनी मंदिर) হল নেপালের পোখরা শহরের প্রাচীনতম মন্দির । এটি ২ নং ওয়ার্ড, মিরুওয়াতে অবস্থিত। [১] এই মন্দিরে নিয়মিতভাবে প্রচুর সংখ্যক স্থানীয় বাসিন্দা, নেপালের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত নেপালি এবং বিদেশি দর্শনার্থী ভিড় করেন। [২] মূল মন্দিরটি দেবী বিন্ধ্যবাসিনীকে উৎসর্গ করা হয়েছে, যিনি একজন ভগবতী (भगवती), এবং ইনি দেবী কালীর অবতার। প্রাঙ্গনে সরস্বতী, শিব, হনুমান এবং গণেশের মতো অন্যান্য দেব-দেবীর মন্দিরও রয়েছে। মন্দিরটি একটি ছোট পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত এবং পূর্ব, উত্তর এবং দক্ষিণ-পূর্ব দিকে পাথরের সিঁড়ি দিয়ে প্রবেশ করা যায়। ভগবান গণেশের মূর্তির পাশে সিন্দুরে আচ্ছাদিত ভগবান হনুমানের মূর্তিটি প্রবেশদ্বারের কাছে ভক্তদের স্বাগত জানায়।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]মন্দিরটি ১৭৬০-এর দশকে প্রতিষ্ঠিত হয়। [৩] নেপালের তৎকালীন রাজা গিরবান যুদ্ধ বিক্রম শাহ ১৮১৫ সালের জুন মাসে হরিবংশ পাধ্যকে পরিবর্তন করে কাহিন্দ্র পাধ্য পাওডেলকে মন্দিরের পুরোহিত হিসেবে নিয়োগ দেন। বলা হয় যে পুরোহিত মন্দিরের জন্য বরাদ্দ গুঠি জমি ব্যবহার করে নিয়মিত ও আচারগত পূজা পরিচালনা করতে পারতেন।[৪]
মন্দিরটি ১৮৪২ বিক্রম সংবতে ৪৭ রোপানি জমির উপর নির্মিত হয়। বিন্ধ্যবাসিনী মন্দিরের কিংবদন্তি শুরু হয় যখন কাস্কীর রাজা সিদ্ধি নারায়ণ মল্ল বা পর্বতের রাজা খড়গমান মল্ল দেবীর জন্য একটি মন্দির প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেন। তাই তিনি তাঁর কয়েকজন লোককে ভারতের বর্তমান উত্তরপ্রদেশ থেকে দেবীর একটি মূর্তি আনতে নির্দেশ দেন।
যাত্রার সময়, পুরুষরা বর্তমান মন্দিরের স্থানে শিবির স্থাপন করেন। তবে পরদিন সকালে তাঁরা যাত্রা অব্যাহত রাখতে পারেননি কারণ দেবীকে শিবির থেকে উঠানো সম্ভব হয়নি। এভাবেই শেষ পর্যন্ত পোখরার মহরিয়া টোল এলাকায় মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
তখন থেকে এই স্থানটি পূজারিদের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। এখানে "বিন্ধ্য" শব্দের অর্থ দেবীর অবতার এবং "বাসিনী" শব্দের অর্থ কোনো স্থানের অধিবাসী।[৫]
মন্দির প্রতিষ্ঠার কিংবদন্তি
[সম্পাদনা]কাস্কীর রাজা সিদ্ধি নারায়ণ শাহ বা পার্বতের রাজা খড়গমান মল্ল দেবী বিন্ধ্যবাসিনীর জন্য একটি মন্দির প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেন। তিনি তাঁর লোকদের দেবীর মূর্তি নিয়ে আসার জন্য বিন্ধ্যাচল পর্বতে (বর্তমান উত্তর প্রদেশ, ভারত) পাঠান। ফেরার পথে লোকেরা বর্তমান মন্দির স্থলের কাছে এক রাতের জন্য শিবির স্থাপন করেন। পরদিন সকালে যাত্রা পুনরায় শুরু করতে গেলে তাঁরা দেখতে পান, মূর্তিটি মাটি থেকে উঠানো সম্ভব হচ্ছে না। এই ঘটনা সম্পর্কে জানানো হলে, রাজা তাঁর লোকদের সেই স্থানেই মন্দির প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেন। এভাবেই বিন্ধ্যবাসিনী মন্দিরের সূচনা হয়।
১৯৪৯ সালের অগ্নিকাণ্ডে পোখরা শহরের অধিকাংশ অংশ ধ্বংস হয়ে যায়, এবং বলা হয়ে থাকে যে অগ্নিকাণ্ডটি বিন্ধ্যবাসিনী মন্দিরে পূজা চলাকালীন একটি আহুতি প্রদান করার সময় শুরু হয়, যা পরবর্তীতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছড়িয়ে পড়ে। [৬]
বিন্ধ্যবাসিনী দেবী সম্পর্কে প্রচলিত বিশ্বাস
[সম্পাদনা]মিরুয়ার বাসিন্দাদের বিশ্বাস যে দেবী বিন্ধ্যবাসিনী দেবকী এবং বসুদেবের অষ্টম সন্তান (ভগবান শ্রীকৃষ্ণ)-এর অবতার হিসেবে আবির্ভূত হন। যখন কংস শিশুটিকে (কৃষ্ণের অবতার) হত্যা করার চেষ্টা করেন, তখন তিনি নিজেই অন্তর্ধান করেন এবং দেবী বিন্ধ্যবাসিনী রূপে প্রকট হন।
স্থাপত্য
[সম্পাদনা]প্রাথমিক মন্দিরের স্থাপত্য শৈলী সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই (এবং ধারণা করা হয় এটি কোনো এক সময়ে পুনর্নির্মিত হয়েছে), তবে বর্তমান মন্দিরটি শিখর শৈলীতে নির্মিত। শিখর শৈলীর মন্দির স্থাপত্যকে বহুল প্রচলিত প্যাগোডা স্থাপত্যের তুলনায় প্রাচীনতর হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
মন্দিরের ফটকের পাশে দুটি সোনালি ধাতব সিংহ দাঁড়িয়ে রয়েছে এবং পটভূমিতে মাঝে মাঝে ধাতব ঘণ্টার গমগম শব্দ শোনা যায়। এক নজরে বিন্ধ্যবাসিনী মন্দিরটি সহজ কিন্তু আকর্ষণীয় একটি স্মৃতিস্তম্ভ। স্থানীয় “ধর্মিক ক্ষেত্র বিকাশ সমিতি” মন্দিরটির পরিচালনা করে।
প্রাঙ্গণে অবস্থিত ভবনসমূহ
[সম্পাদনা]- সরস্বতী মন্দির (सरस्वती मन्दिर)
- হনুমান মন্দির (हनुमान मन्दिर)
- শিব মন্দির (शिव मन्दिर)
- বিন্ধ্যবাসিনী সংস্কৃত বিদ্যালয় (बिन्ध्यबासिनी मन्दिर)
- বিষ্ণু মন্দির (विष्णु मन्दिर)
- গণেশ মন্দির (गणेश मन्दिर)
- যোগী পাটি (जोगी पाटी)
- বইয়ের দোকান (किताब पसल)
- ফটোগ্রাফি এলাকা (फोटो शूट पसल)
মন্দির এলাকা ব্যবস্থাপনা
[সম্পাদনা]বর্তমানে মন্দিরটি বিন্ধ্যবাসিনী ধর্মিক ক্ষেত্র বিকাশ সমিতি দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে,[৭] যারা বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম এবং এলাকা উন্নত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে গুরুকুল ভবন (गुरुकुल भवन) প্রতিষ্ঠা, এলাকার বিভিন্ন ছোট মন্দিরের আধুনিকীকরণ, মন্দির এলাকার নিচে বিন্ধ্যবাসিনী পার্কের উন্নয়ন ইত্যাদি।
প্রবেশযোগ্যতা
[সম্পাদনা]১২ জনের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি লিফট মন্দির প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়েছিল,[৮] যা নেপালের রাষ্ট্রপতি ৭ মার্চ, ২০১৯ তারিখে উদ্বোধন করেন। লিফটটি প্রধানত প্রতিবন্ধী তীর্থযাত্রী এবং বয়স্কদের জন্য ব্যবহৃত হয়।
একটি প্রবীণ নাগরিক মৈত্রী কেন্দ্র ২০১৬ সালে জানুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠা করা হয়।[৯] এই সুবিধাটি বয়স্ক নাগরিকদের জন্য একটি অবসর যাপন কেন্দ্র প্রদান করে, যারা এখানে আসেন তাদের প্রতিদিন খাবার সরবরাহ করা হয়, এবং বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়।
খবরে
[সম্পাদনা]- প্রাক্তন রাজা জ্ঞানেন্দ্র এবং রাণী কমল ২০০৪ সালের ২৭ মার্চ মন্দিরে পূজা দেন। [১০]
- ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ তারিখে মন্দির পরিদর্শনে আসেন, এবং স্থানীয়রা জানেন যে তিনি নেপালি ভাষায় অন্তর্গল কথা বলতে পারেন। [১১]
- বিন্ধ্যবাসিনী ধর্মিক ক্ষেত্র বিকাশ সমিতি ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ তারিখে নবদুর্গা উৎসব আয়োজন করে। [১২]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ । ২০২০-০৬-১৫ https://web.archive.org/web/20200615050624/http://pokharamun.gov.np/sites/pokharamun.gov.np/files/Ward%202.jpg। ২০২০-০৬-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৫।
|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য) - ↑ "Soaring Indian arrivals boost Pokhara tourism"। ২০২০-০৬-১৪। ২০২০-০৬-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৪।
- ↑ Adhikari, Jagannath (২০১৭)। Pokhara: Urbanization, Environment and Development। Kindle Edition। পৃষ্ঠা Loc 86।
- ↑ Regmi, Mahesh (ডিসেম্বর ১, ১৯৭৪)। "Regmi Research Collections": 1।
- ↑ Himalaya, Altitude (২০২০-০৮-১৫)। "Bindhyabasini Temple Pokhara Nepal | History and Location of Bindabasini"। Altitude Himalaya (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৮-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-১০।
- ↑ Reed, Dave; McConnachie, James (২০১৩-১১-০৭)। The Rough Guide to Nepal (ইংরেজি ভাষায়)। Rough Guides UK। আইএসবিএন 978-1-4093-6034-6।
- ↑ "Lift Inauguration at Bindhyabasini Temple Premises"। ২০২০-০৬-১৪। ২০২০-০৬-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৪।
- ↑ "President Bhandari inaugurates lift | eAdarsha.com – English Version"। ২০২০-০৬-১৪। ২০২০-০৬-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৪।
- ↑ "My Republica - Chief Secy Subedi inaugurates Senior Citizens Friendship Center"। ২০২০-০৬-১৫। ২০২০-০৬-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৫।
- ↑ "Royal couple visits Bindhyabasini"। The Himalayan Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৪-০৩-২৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৪।
- ↑ "Visiting Indian army chief visits Bindhyabasini temple"। ২০২০-০৬-১৪। ২০২০-০৬-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৪।
- ↑ "Navadurga Festival kicks off in Pokhara"। ২০২০-০৬-১৫। ২০২০-০৬-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৫।